চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে বড়উঠান ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল হারুন এর বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ঘুষ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মইজ্জ্যারটেক এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মোঃ নুরুল আমিন।
সংবাদ সম্মেলনে মোঃ নুরুল আমিন পক্ষে লিখিত বক্তব্যে মোঃ মোমেন হোসেন জয় বলেন, “তাঁর পিতা আবদুর শুকুর ১৯৫৯ সালে সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে দৌলতপুর এলাকায় ৬ শতক জমি খরিদ করেন এবং সেই সময় থেকেই তাঁদের পরিবার উক্ত জমির দখলে রয়েছে। দীর্ঘ ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁদের দখলে থাকা জমিতে কৃষিকাজ চালিয়ে আসছেন। সম্প্রতি ভুলবশত নাছির উদ্দিন গং-এর নামে নামজারি হওয়ায় তারা জমির মালিকানা দাবি করতে শুরু করে। এই নিয়ে দুই দফা শালিশি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “নাছির উদ্দিন গং চট্টগ্রাম মহানগর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় একটি মিথ্যা মামলা (মামলা নং ৭৩৫/২৫) দায়ের করেন। আদালত মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন কর্ণফুলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে। তাঁর নির্দেশে বড়উঠান ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল্লাহ আল হারুন ২৫ সেপ্টেম্বর সরেজমিন তদন্তে যান।”
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, “ওই কর্মকর্তা তদন্তের নামে বাদী পক্ষের (নাছির উদ্দিন গং) প্রভাবে কাজ করেন এবং বিবাদীপক্ষ (নুরুল আমিন গং)-কে নির্ধারিত তারিখে যথাযথভাবে অবগত না করেই একপাক্ষিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন যে, “জমিটি এখনো বেদখল হয়নি” এবং “কোনো দখল সংক্রান্ত মামলা আদালতে নেই”— যা বাস্তবতার সাথে সম্পূর্ণ অসঙ্গত।”
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল আমিন দাবি করেন, “তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে প্রতিবেদনে পক্ষে মত দেওয়ার বিনিময়ে সরাসরি ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তাঁরা তাতে রাজি না হওয়ায়, কর্মকর্তাটি বাদীপক্ষের পক্ষে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেন।”
ভুক্তভোগী পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ আব্দুল্লাহ, ইদ্রিস পানু, মোঃ হানিফ সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাঁরা দাবি করেন, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নিরপেক্ষতা বজায় না রেখে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, যা বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে।
নুরুল আমিন জানান, বর্তমানে তাঁদের পক্ষে দুটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে — একটি বি.এস. খতিয়ান সংশোধন মামলা (নং ১১৬৭১/২০২৫) এবং অপরটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি মামলা (নং ৫৯২/২০২৫)।
শেষে ভুক্তভোগী পরিবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটনের দাবি জানায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে।