মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম :
স্বাধীনতার রণাঙ্গন জয়ী ‘বীর’ মৃত্যুর কাছে পরাজিত। চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুস ঈদের দিনে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭০ বছর।
গত মার্চ মাসের ৮ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত তিনি জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায় । পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে ঢাকা উত্তরায় অবস্থিত মেয়ের বাসা থেকে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভৈরব আইবি ভবনের পাশে বিসমিল্লাহ টাওয়ারে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে একমাত্র ছেলে মোঃ খালেদ বিন ইউনুস (বাপ্পি) বাসা নিয়ে আসা হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার ঈদের দিন দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে পৈতৃক নিবাস কর্ণফুলী উপজেলা চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন মৌলভীবাজার ৭ নং ওয়ার্ড বড় হাজীর বাড়িতে তার মরদেহ আনা হয়। আজ শুক্রবার বাদে আসর পশ্চিম চরলক্ষ্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মরহুমের নামাজে জায়নাযা ও রাষ্টীয় মর্যাদা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র সন্তান, এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
মরহুমের জায়নাযায় উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারা-কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম-১৩) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী রণি,
কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুমা জান্নাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এন ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক আহমদ বি কম, কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জহির হোসেন,কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান তালুকদার, কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমির আহমেদ, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি এস এম ছালেহ সহ উপজেলা-ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
মরহুম মোঃ নুরুজমা’র দ্বিতীয় সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউনুস। কর্ণফুলী চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন মৌলভীবাজারে ১৯৫৪ সালে মে মাসের ২০ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম লড়াই বন্দর অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। তিনি নগরীর গোসাইলডাঙ্গা রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ও চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে। স্বাধীনতার পূর্বে অবিভক্ত চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বে ছিলেন তিনি। চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘ ১৫ বছর। পশ্চিম পটিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন পাঁচ বছর। কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। চট্টগ্রাম পোর্ট মার্চেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন দুই বছর। সর্বশেষ তিনি কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন।
Discussion about this post