প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র নন্দিনী জান্নাতি নারীদের সর্দার হযরত খাতুনে জান্নাত মা ফাতেমাতুয্ যাহ্রা (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহার) ওফাত বার্ষিকী স্মরণে ইমাম শেরে বাংলা (রহ.) সুন্নী ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় খাতুনে জান্নাত কনফারেন্স, ইফতার ও দোয়া মাহফিল ১৪ মার্চ রোজ বৃহষ্পতিবার স্টেশন রোডস্থ হযরত সৈয়দ গাজী ভঙ্গী শাহ্ (রহ.)’র মাজার প্রাঙ্গনে চট্টগ্রাম ফলমন্ডি মোহাম্মদ আহাম্মদ এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী ট্রাস্ট’র যাকাত তহবিলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী এম.জে.এফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ফলমন্ডির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মেসার্স মেহেদী এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াছিন। চট্টগ্রাম হালিশহর মাহাসিনুল কোরআন ইসলামী একাডেমির সুপার গাজী মাওলানা মুহাম্মাদ আমজাদ হোসেন নুরী’র সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দরগাহ্-মাজার সংস্কার সংরক্ষণ কমিটির চেয়ারম্যান শাহ্ সুফী মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, মাওলানা জানে আলম আল কাদেরী, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুর হোসেন, ইমাম শেরে বাংলা (রহ.) সুন্নী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাওলানা আবু মুছা আল কাদেরী, এস এম নিজাম উদ্দিন কাদেরী, মাওলানা শেখ আহমদ মজিদি, মাওলানা আব্দুল মজিদ আনোয়ারী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে নিজের জানের চেয়েও বেশি ভালবাসতেন। তাই মা ফাতিমাকে রাসুলে পাকের চোখের মণি।এমনকি রাসুলে পাক মা ফাতেমার মুহাব্বতে বলেন – ফাতেমা ; তোমার তরে আমার বাবা ও মা উভয় উৎসর্গ হোক। কাজেই দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে রাসুলে পাক মা ফাতেমাকে নিজের জানের চেয়েও বেশি ভালবাসেন। আর ভালবাসার নীতি হলো আশেক তাঁর মাশুকের দূরত্ব-বিরহ সহ্য করতে পারে না। তাঁর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল রাসুলে পাক ও মা ফাতেমার মুহাব্বত। যার কারণে রাসুলে পাক দুনিয়া হতে বিদায় নেওয়ার পূর্বে একদিন মা আয়েশা ছিদ্দিকা রাঃ এর সামনে মা ফাতেমাকে ডাকলেন।আর ডেকে কি যেন বলল। তৎক্ষণাত মা ফাতেমা অনেক ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। প্রতি মূহুর্তে রাসুলে পাক মা ফাতেমাকে আবার কি যেন বলল। সাথে সাথে মা ফাতিমা মুচকি হাসি দিল। আর এর কিছু দিন পর রাসুলে পাক দুনিয়া হতে বিদায় গ্রহণ করেন। কিছুদিন মা আয়েশা ছিদ্দিকা মা ফাতেমার নিকট জানতে চাইল। আচ্চা ” রাসুলে পাক ইন্তিকালের পূর্বে তোমাকে ডেকে কি যেন বলল। আর তুমি প্রতি মূহুর্তে দুঃখী হয়ে গেলে। আবার পুনরায় মুচকি হাসি দিয়েছিলে” এর কারণ কি? জবাবে মা ফাতেমা বলেন-প্রথমে দুঃখী হওয়ার কারণ হল রাসুলে পাক নিজের ইন্তেকালের সংবাদ দিলেন। আর হাসার কারণ হল রাসুলে পাক আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে রাসুলে পাক দুনিয়া হতে ইন্তেকালের পর আমিই সর্বপ্রথমে রাসুলে পাকের সাথে পরকালে মিলিত হব। আর একথা বলার সাথে সাথে মা আয়েশা ছিদ্দিকা (রাঃ) মা ফাতেমার মুহাব্বতে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে – সুবহানাল্লাহ। তাহলে দেখুন ! রাসুলে পাক মুহাব্বতের নীতি অনুযায়ী মা ফাতেমাকে উনার ইন্তিকালের ছয় মাসের মধ্যেই মা ফাতেমা আল্লাহর হুকুমে রাসুলে পাকের ভবিষৎ বাণী অনুযায়ী ইন্তেকাল করেন। আর মা ফাতেমা রাসুলে পাকের সর্বপ্রথম পরকালের সাথী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। একইভাবে রাসুলে পাক বলেন – মা ফাতেমা আমার কলিজার টুকরা। সুতরাং, যে ফাতেমাকে কষ্ট দিল, সে আমাকেই কষ্ট দিল। আর যে আমাকে কষ্ট দিল, সে স্বয়ং আল্লাহকে কষ্ট দিল। সুতরাং মা ফাতেমা তথা আহলে বাইতের সন্তুষ্টিতে রাসুলে পাকের সন্তষ্টি। আহলে বাইতের অসন্তুষ্টিতে রাসুলে পাকের অসন্তুষ্টি। আর রাসুলে পাকের অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। সুতরাং আমাদের সবসময় রাসুলে পাক ও রাসুলে পাকের আওলাদদেরকে যথা উপযুক্ত মুহাব্বত করতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার সামর্থ দান করুক।
Discussion about this post