রকমারি ডেস্ক : মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ইবাদতের অন্যতম মাস মাহে রমজান। সারা দিন সংযম করে সূর্যাস্তের পর ইফতার করা। রমজান মাসের এটাই রেওয়াজ। যুগ যুগ ধরে দেশে দেশে রমজানের ইফতারে খেজুর খাওয়ার রীতি। কেন সবাই খেজুর খায় উপোস ভাঙার সময়? এর পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ। যা হয়ত সবাই জানেন না। দিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট লভনীত বাত্রা জানাচ্ছেন, খেজুর খাওয়ার প্রকৃত কারণ।
খেজুরের পুষ্টিগুণ সুস্বাদু আর বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়।খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয় চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
আসুন জেনে নেয় ইফতারে কেন খেজুর খাবেন?
হৃদরোগের ঝুঁকি খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ খেজুর।
ক্যান্সার প্রতিরোধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাই যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের বেলায় ক্যান্সারের ঝুঁকিটাও অনেক কম থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ খেজুরে থাকা আয়রন ও ফাইবার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।প্রচুর পটাসিয়াম পাওয়া যায় খেজুর থেকে। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া মাত্র কয়েকটি খেজুর ক্ষুধার তীব্রতা কমিয়ে দেয় এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। অল্পতেই শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে।
এনার্জি খেজুরের পুষ্টিগুণ প্রচুর। সুগারের পরিমাণ এত বেশি থাকে খেজুরে যে এক কামড়েই অনেকটা এনার্জি পাওয়া যায়। এর মধ্যে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, গ্লুকোজ, ম্যাগনেশিয়াম ও সুক্রোজ থাকে। যে কারণে খেজুর খাওয়ার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে শরীরে এনার্জি বেড়ে যায়। সারা দিন উপোস করে শরীরে ক্লান্তি আসে, তা দূর করে এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে খেজুর।
অ্যাসিডিটি উপোস করলে সাধারণত অ্যাসিডিটি হয়। যার থেকে অস্বস্তি হতে থাকে। খেজুর শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বশে রেখে অস্বস্তি কমায়।
বেশি খাওয়া সারা দিন না খেয়ে থাকলে খাওয়ার সময় বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়। তাই খেজুর খেয়ে উপোস ভাঙলে এর মধ্যে থাকা জটিল কার্বোহাইড্রেট হজম হতে বেশি সময় নেয়। ফাইবার থাকার কারণে পেট ভরা লাগে। তাই বেশি খাওয়ার আগেই পেট ভরে যায়।
হজম অনেক ক্ষণ না খেয়ে থাকলে তা পৌষ্টিকতন্ত্রের কার্যকারিতায় ব্যাঘাত ঘটায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে। খেজুর শরীরে উত্সেচক ক্ষরণে সাহায্য করে। ফলে হজম ভাল হয়।
ডিটক্সিফিকেশন উপোস করার ফলে শরীরে যে খারাপ কোলেস্টেরল জমা হয় তা ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে খেজুর।
Discussion about this post