* প্রশাসনের তৎপরতায় ৫ ঘন্টা পর উদ্ধার
* মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক : দন্দ্ব নিয়ে মসজিদ থেকে ফিরার পথে কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর থেকে শহীদুল আলম জুয়েল (৩১) নামের এক যুবককে অপহরণ করা হয়।
গতকাল বুধবার (৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চরপাথরঘাটা ইউপি’র ৯নং ওয়ার্ড ইছানগর মৈন্ন্যারগুষ্টির শাহ আলমের পুত্র শহীদুল আলম জুয়েলকে চট্টগ্রাম মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয়ে তাকে অপহরণ করে প্রথম লালদীঘি মাঠে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাইভেট কারে তুলে উঠিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় স্থান পরিবর্তন করতে থাকে। এসময় জুয়েল এর পরিবারের নিকট ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এদিকে শহীদুল আলম জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়েছে মর্মে সংবাদে দৈনিক জনবাণী পত্রিকার প্রতিনিধি মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন কর্ণফুলী থানায় যোগাযোগ করে জানতে পারেন শহীদুল আলম জুয়েল নামের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনার বর্ণনা শুনার পর কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) অধীন সকল থানা এলাকায় পুলিশের এলার্ট জারি করা হলে তাকে অজ্ঞাত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শহীদুল ইসলাম জুয়েল দৈনিক জনবাণীকে জানান প্রতিদিনের ন্যায় রমজানের তারবীহ নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরার সময় পথ আটকিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি পরিচয়ে কয়েকজন যুবক আমার সাথে কথা বলেন। এ সময় তারা দাবী করে আমি গত ৪ আগষ্টে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি এ বিষয়ে কথা বলতে থানায় যেতে হবে। থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সিএনজি যোগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে এনে একটি সাদা প্রাইভেট কারে তুলে দেন। তারা আমাকে নিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪ ঘন্টা ঘুরতে থাকে, আমার হাতে থাকা মোবাইল থেকে আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। আমার পরিবার থেকে এতো টাকা দিতে অপারগতা জানালে টাকার অঙ্ক কমাতে থাকে সর্বশেষ বিকাশের মাধ্যমে টাকার লেনদেনের কথা বললেও এক পর্যায়ে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।
কোতোয়ালি মোড় থেকে কর্ণফুলী থানার ওসি ও এস আই মিজানুর রহমান আমাকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। কোতোয়ালি থানায় আমার জবানবন্দি রেকর্ড করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।
এ সময় জুয়েল দাবী করে বলেন ব্যবসায়িক দন্দ্ব থেকে বিএনপির নেতা এম. মঈন উদ্দিন (সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান), মোহাম্মদ আজাদ, মোহাম্মদ জহির, ইছানগর ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজ্জাক মেম্বার ও রাজ্জাকের ছোট ভাই, নব্য বিএনপির নেতা জাফর, ইমরান পাটোয়ারী মিলে কর্ণফুলী থানায় আমার নামে মিথ্যা মামলা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে শহরের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে অপহরণ করেও ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা না নিলে হয়তো আমার লাশ পাওয়া যেত না।
উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে জুয়েলকে অপহরণেও ব্যর্থ হয়ে শেষ পযর্ন্ত হাল ছাড়েননি অপহরণে জড়িত মূলহোতারা- কোতোয়ালি থানায় ৪ আগষ্টের মামলায় জড়িয়ে দেওয়া নানান অপতৎপরতায় লিপ্ত ছিল বলে তার ছোট ভাই মুন্না দাবী করেন।
এ বিষয়ে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম. মঈন উদ্দিন জানান-জুয়েল এর সাথে আমার কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও দন্দ্ব ছিল না। কোন উদ্দেশ্য আমার নামে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে আমার বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, শহীদুল আলম জুয়েল নামের এক যুবককে অপহরণ করে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়, কোতোয়ালি থানাসহ বেশ কয়েকটি থানার ইনফরমেশন দেওয়া হলে চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে গাড়ি তল্লাশি শুরু করা হয়। তাকে কোতোয়ালি থানা এরিয়া থেকে উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হলে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।