ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেনের ৯১তম ফাঁসি দিবসে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) চট্টগ্রাম জেলা শাখা পুষ্পমাল্য অর্পণ ও সমাবেশ করেছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা জেএম সেন হল প্রাঙ্গণে সূর্য সেনের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, সদস্য আকরাম হোসেন, আহমদ জসীম, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সদস্য সুপ্রীতি বড়ুয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন, চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন এবং উম্মে হাবিবা শ্রাবণীসহ অন্য নেতারা।
বক্তারা বলেন, ১৯৩০ সালে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহ এ দেশের জনগণের সংগ্রামের এক অনন্য অধ্যায়। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘ লড়াইয়ে চট্টগ্রামকে স্বাধীন করার ঘটনাটি পুরো ভারতবর্ষের জনগণের মধ্যে শক্তি ও সাহস জাগিয়েছিল। সাম্রাজ্যবাদী শোষণ এবং ঔপনিবেশিক পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগিয়েছিলেন সূর্য সেন ও তার সহযোদ্ধারা। গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের সেই লড়াই আজও অব্যাহত রয়েছে।
তারা আরও বলেন, আওয়ামী ফ্যাসীবাদী সরকারের পতন হলেও দেশের সার্বিক শোষণমূলক কাঠামো এখনো বদলায়নি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সিন্ডিকেট ও শেয়ারবাজারে কারসাজি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, নারী নির্যাতন এবং মন্দির-মাজারে হামলাসহ জনগণের জীবন-জীবিকার সংকট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। একইসঙ্গে সংবিধান, জাতীয় সংগীত এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক ও বিকৃতি করার অপপ্রয়াস চলছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি এবং মুজিববাদী সংবিধান ছুড়ে ফেলার মতো বক্তব্য এসব ঘৃণ্য চেষ্টার অংশ। এর মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিগুলোকে ক্ষমতায় পুনর্বাসিত করার ষড়যন্ত্র চলছে।
বক্তারা দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের সামনে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। পতিত স্বৈরাচার, যুদ্ধাপরাধী এবং গণবিরোধী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করতে হবে।