মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, কর্ণফুলী : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার সীম উৎপাদন ও স্বাদের একটি অনন্য বৈশিষ্ট থাকলেও চলতি মৌসুমে সীমসহ সবজি চাষ করে বিপাকে পড়েছে কৃষক। একদিকে বাজারে সবজির দাম নিন্মমূখী অন্যদিকে দোহাজারী অঞ্চলের সবজি সরবরাহ বেশি হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে তাদের। উপজেলার কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম। এতে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বস্তি মিললেও দিশাহারা কৃষকরা। সার, সেচ, কীটনাশক আর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ফসল উৎপাদনে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সীম ২০ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ১০ থেকে ১২ টাকা, বেগুন ১৫ থেকে ২০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও লাল শাকের আঁটি ৬ থেকে ৮ টাকা আর প্রতি পিস ফুলকপি ১০ থেকে ১৫ টাকা, বাঁধাকপি ১০ থেকে ১২ টাকা এবং প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। বাজারে লাল শাকের কেজি ৭ থেকে ১০ টাকা, মুলা শাক ৫ টাকা, ডাঁটা শাক ১০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১০ ও কালাই শাক ১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম নিন্মমূখী হওয়ায় সাধারণ ক্রেতার মাঝে স্বস্তি ফিরে এলেও হতাশায় মাথায় হাত রাখছেন সবজি উৎপাদনকারী কৃষক তাদের অভিযোগ শুরুতে বাজার দাম পেলেও উৎপাদন ও অন্য উপজেলা থেকে প্রচুর পরিমাণ সবজি আসায় বর্তমান বাজারে দাম পাচ্ছে না তারা। এ বিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কৃষক মোহাম্মদ নাছির জমি চাষ করেন চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের সিডিএ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন বর্গা জমিতে। তার অভিযোগ ২০ একর জমিতে চাষ করতে তার খরচ পড়েছে ২০ হাজার টাকার অধিক। সেই জমি থেকে সবজি বিক্রি করে হয়তো ২২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। বৃথা যাবে তার কঠোর পরিশ্রম। এ সময় তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
আরেক কৃষক শিকলবাহা ৯নং ওয়ার্ডের আলী আকবর বলেন, তেল-সার, কীটনাশক আর বীজের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে সবজি উৎপাদনে খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি হয়েছে। এমতাবস্থায় বাজার পরিস্থিতি এমন থাকলে কৃষকদের পথে বসতে হবে।
চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কৃষক আব্দাল মান্নান বলেন, বিগত বছরগুলোতে শুধু সীম বিক্রি করে যে টাকা আয় হয়েছে এ বছর জমির অন্যান্য ফসল বিক্রি করে তা আয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে শিকলবাহা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নাছির বিগত ১৫ বছর যাবত চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের সিডিএর আবাসিকের দক্ষিণ পাশে জমিতে কৃষি কাজে নিয়োজিত থাকলেও উপজেলার কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহযোহিতা পায়নি বলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলা কৃষি অফিসার শ্যামল চন্দ্র সরকার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঐ এলাকার কৃষি সম্প্রাসারণ কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।