মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে শীতকালীন সবজি ভরপুর। তবুও কমছে না দাম। মূলা ছাড়া আর কোনো সবজির দামে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। শীত আসি আসি করছে। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন নানা সবজি। কিন্তু দাম এখনো চড়া। মাঝে মধ্যে দু-একটি পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঊর্ধ্বমূল্য। আর অতিরিক্ত মূল্য নিম্নআয়ের মানুষকে ফেলেছে বেকায়দায় । চড়া বাজারে সংসার চালাতে অনেকেই খাচ্ছেন হিমশিম।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারগুলোতে এ চিত্র দেখা গেছে। দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতি নিয়ে দোকানির ওপরে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ভোক্তারা। এদিকে বাজারে পণ্যের দাম বাড়তি থাকায় বাজারের স্থায়ী দোকান ছেড়ে ভ্যান ও ফুটপাতে পণ্য নিয়ে বসছেন কেউ কেউ।
চট্টগ্রাম মহানগররের সিরাজুদ্দৌলা রোডস্থ সাবুরিয়া বাজারের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন সকালে আলু বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা প্রতি কেজি, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেড়শ ৬০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, লাউ প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, ফুল প্রতি কেজি ১০০ টাকা , বাঁধাকপি প্রতি কেজি ৭০ টাকা পেঁপে ৫০ টাকা, মুলা ৬০-৭০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা কেজি, লাল শাকের মুঠি ২০ টাকা, সরষে শাক ১ মুঠি ৩০ টাকা। ক্রেতারা আসছেন আর দাম শুনে তর্কে জড়াচ্ছেন দোকানির সঙ্গে। এক দোকান থেকে আরেক দোকান আরেক দোকান থেকে আরেক দোকান ঘুরেই কাটিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। এ চিত্র রাজধানীর গোপীবাগ রেললাইন সংলগ্ন বাজারের। কেউ আবার মূল বাজারে কম দামে না পেয়ে গলির ভেতরে ফুটপাথ ও ভ্যানে বিক্রেতার কাছে ছুটছেন।
তাই বাজারের চেয়ে অলি-গলির দোকানগুলোতেই যেন ক্রেতাদের ভিড় বেশি। ক্রেতাদের কথা বাজারে দোকান ভাড়া বেশি দিতে হয় বলে দোকানিরা সবজির দাম বেশি চাচ্ছে।
এদিকে ভোক্তাদের অভিযোগ, দিনকে দিন বাজারে দাম যেন বেড়েই যাচ্ছে। কদিন আগে সাধারণ মানুষের খাবার ডিমের দাম ছিল বাড়তি। এখন শীতের সবজিতে বাজার ভর্তি অথচ দাম বেশি।
মোহাম্মদ ইদ্রিস নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বাজার থেকে গলিতে আসলাম হয়তো কিছুটা কমে পাব বলে। কিছু কিছু তরকারিতে চার পাচ টাকা কম পেলাম। কিন্তু এটা তো সমাধান না। ৫০০ টাকার সবজি কিনেছি তিন দিন যাবেনা এতে।’
সঞ্জিতা বসু বলেন, ‘বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে প্রতিদিন বাজার করি। আগে এক কেজি কিনতাম এখন সেখানে অর্ধেক নিতে হচ্ছে। আমাদের আয় তো বাড়েনি। তাই চাহিদা কমিয়ে দিয়েছি। এক মুঠি শাক দশ টাকা দিয়ে কিনেছি এখন ২০ টাকা। এক মুঠিতে এতো কম যে একারই হয়না। ৪০ টাকা দিয়ে শাক কিনে পুষ্টি কতটুকু পাব?’
ভ্যান দোকানি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাজারে স্থায়ী দোকানে ফিক্সড ভাড়া দিতে হয়। বিক্রি হোক বা না হোক মাস শেষে ভাড়া দিতেই হবে। আরও অনেক টাকা দিতে হয় বাজার কমিটিকে। বাজারে পণ্যের দাম বাড়াতে কাস্টমার এখন নির্ধারিত নেই। আমার চেয়ে যার কাছে কম দামে পাচ্ছে সেখানে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমি তো কমে দিয়ে পোষাতে পারছিনা। সেজন্য দোকান ছেড়ে দিয়ে ভ্যান ভাড়া করে সবজি বিক্রি করছি। এতে ভাড়া কম দিতে হচ্ছে আবার বিক্রিও বেশি হচ্ছে।