নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) নগরের কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয় এরা সন্ত্রাসী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ, ইয়াবা পাচারকারী ও বিভিন্ন মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এছাড়া তাদের অনেকেই সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অফিস-আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রতারণা, ব্ল্যাক মেইল করে সাংবাদিকতাকে কলঙ্কিত করে চলেছে।
এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার ওসি এসএম ওবায়দুল হক বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রতিষ্ঠান। জাতীয় অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এ প্রেস ক্লাব। গত ১৪ আগস্ট আসামিরা দা, ছুরি, লাঠিসোটা, হাতুড়ি, দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নৈরাজ্য, ত্রাস সৃষ্টি ও লুটপাট চালানোর জন্য সাইফুল ইসলাম শিল্পী, সালেহ নোমান ও শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা প্রেসক্লাবের দিকে ছুটে আসলে প্রেসক্লাবের কর্তব্যরত দারোয়ান মূল গেট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দেন।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হামলা ভাঙচুর, আহত ১০
আসামিদের কয়েকজন গেট টপকিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙ্গে ভবনে প্রবেশ করে। এরপর ভবনের চতুর্থ তলার ক্লাবের সামনের গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ, মিডিয়া সেন্টার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কক্ষে রক্ষিত কম্পিউটার, সিসিটিভিসহ বিভিন্ন মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তারা হিসাব কক্ষে রক্ষিত প্রায় দেড় লাখ টাকা , মূল্যবান জিনিসপত্র ও প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ লুট করে নিয়ে যায়।
লুটতরাজে বাধা দিতে গেলে তাদের হামলায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য হেলাল উদ্দিন সিকদার (৪৪), মো. গোলাম মর্তুজা আলীসহ (৪৭) প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। আসামিরা ক্লাবের সদস্যদের জিম্মি করে ক্লাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। যাওয়ার সময় তারা হত্যার হুমকি দিয়ে যান।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এদিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে দুর্বৃত্তদের হামলাকে নজিরবিহীন এবং ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম এ ঘটনার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
Discussion about this post